ঢাকা ১০:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আরও বাজারমুখী হচ্ছে ডলারের দাম, পদ্ধতি নিয়ে প্রজ্ঞাপন হতে পারে আজই

নিজস্ব সংবাদ :

দেশে আবারও বেড়েছে মার্কিন ডলারের দাম। খোলাবাজারে এক ডলারের বিনিময়ে গুনতে হচ্ছে ১২৬ থেকে ১২৬ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। এদিকে ব্যাংকেও গ্রাহকদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হোসনে আরা শিখা খবরের কাগজকে বলেন, ‘ডলারের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার জন্য ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারদের ব্যবসায় অদক্ষতাকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।’

গত জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম ১১০ টাকার সঙ্গে আরও ৭ টাকা বাড়িয়ে ক্রলিং-পেগ পদ্ধতি বা বাজারমুখী দাম চালু করে। দাম বৃদ্ধির ফলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারে ১১৭ টাকার সঙ্গে বাড়তি আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা পান। এতে রেমিট্যান্সের ডলারপ্রতি দাম নির্ধারিত হয় ১২০ টাকার মতো। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। তবে প্রবাসী আয়ের সেই ধারা বর্তমানে কিছুটা পড়তির দিকে বলে এক্সচেঞ্জ হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এতে প্রতি ডলারের ক্রয় মূল্য ১২০ টাকা এবং বিক্রিমূল্য ১২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী বাহার খবরের কাগজকে বলেন, খোলাবাজারে আবারও ডলারের দাম প্রায় ১২৭ টাকায় উঠে। তবে তা ৫০ পয়সা কমে যায়। ফলে ১ ডলার ১২৬ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি জানান, মূলত বিদেশফেরত যাত্রীদের কাছ থেকে মানি চেঞ্জাররা ডলার কিনে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে। সম্প্রতি বিদেশফেরত লোকজনের সংখ্যাও কমেছে, আবার বিক্রির মতো ডলারও আসছে না।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র ব্যাংকার খবরের কাগজকে জানান, ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ডলার পাচ্ছে না। কোনো কোনো ব্যাংক বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। তাই তারা গ্রাহককে কম দামে ডলার দিতে পারছে না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহক নিজেই আমদানির ঋণপত্র খুলতে বেশি দামে ডলার নিতে তাদের সম্মতির কথা জানান। এ অবস্থায় গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে এক্সচেঞ্জ হাউসের কাছ থেকে ব্যাংকও বেশি দামে ডলার কিনছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছর শেষে ছুটিতে বিদেশ যেতে অনেকে ডলার খুঁজেন। এর ফলে হঠাৎ ডলারের বাড়তি টান পড়ে। এতে ডলারের দাম বেড়ে যায়।

ডলার সংকটের কারণে গত অর্থবছরে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ঋণপত্র কিছুটা উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সময় মতো আমদানি হলে এর প্রভাব পড়বে বাজারে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি কমবে।

বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে ডলারসংকট ছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এতদিন ডলারের বিনিময়হার নিয়ন্ত্রণ করায় বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল। রেমিট্যান্সের আয় হুন্ডি হয়ে অবৈধপথে দেশে এসেছে। আর মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে বিদেশেই থেকে গেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:২৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
৬৮ বার পড়া হয়েছে

আরও বাজারমুখী হচ্ছে ডলারের দাম, পদ্ধতি নিয়ে প্রজ্ঞাপন হতে পারে আজই

আপডেট সময় ১২:২৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশে আবারও বেড়েছে মার্কিন ডলারের দাম। খোলাবাজারে এক ডলারের বিনিময়ে গুনতে হচ্ছে ১২৬ থেকে ১২৬ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। এদিকে ব্যাংকেও গ্রাহকদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হোসনে আরা শিখা খবরের কাগজকে বলেন, ‘ডলারের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার জন্য ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারদের ব্যবসায় অদক্ষতাকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।’

গত জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম ১১০ টাকার সঙ্গে আরও ৭ টাকা বাড়িয়ে ক্রলিং-পেগ পদ্ধতি বা বাজারমুখী দাম চালু করে। দাম বৃদ্ধির ফলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারে ১১৭ টাকার সঙ্গে বাড়তি আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা পান। এতে রেমিট্যান্সের ডলারপ্রতি দাম নির্ধারিত হয় ১২০ টাকার মতো। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। তবে প্রবাসী আয়ের সেই ধারা বর্তমানে কিছুটা পড়তির দিকে বলে এক্সচেঞ্জ হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এতে প্রতি ডলারের ক্রয় মূল্য ১২০ টাকা এবং বিক্রিমূল্য ১২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী বাহার খবরের কাগজকে বলেন, খোলাবাজারে আবারও ডলারের দাম প্রায় ১২৭ টাকায় উঠে। তবে তা ৫০ পয়সা কমে যায়। ফলে ১ ডলার ১২৬ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি জানান, মূলত বিদেশফেরত যাত্রীদের কাছ থেকে মানি চেঞ্জাররা ডলার কিনে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে। সম্প্রতি বিদেশফেরত লোকজনের সংখ্যাও কমেছে, আবার বিক্রির মতো ডলারও আসছে না।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র ব্যাংকার খবরের কাগজকে জানান, ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ডলার পাচ্ছে না। কোনো কোনো ব্যাংক বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। তাই তারা গ্রাহককে কম দামে ডলার দিতে পারছে না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহক নিজেই আমদানির ঋণপত্র খুলতে বেশি দামে ডলার নিতে তাদের সম্মতির কথা জানান। এ অবস্থায় গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে এক্সচেঞ্জ হাউসের কাছ থেকে ব্যাংকও বেশি দামে ডলার কিনছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছর শেষে ছুটিতে বিদেশ যেতে অনেকে ডলার খুঁজেন। এর ফলে হঠাৎ ডলারের বাড়তি টান পড়ে। এতে ডলারের দাম বেড়ে যায়।

ডলার সংকটের কারণে গত অর্থবছরে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ঋণপত্র কিছুটা উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সময় মতো আমদানি হলে এর প্রভাব পড়বে বাজারে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি কমবে।

বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে ডলারসংকট ছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এতদিন ডলারের বিনিময়হার নিয়ন্ত্রণ করায় বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল। রেমিট্যান্সের আয় হুন্ডি হয়ে অবৈধপথে দেশে এসেছে। আর মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে বিদেশেই থেকে গেছে।